আদিবাসীদের নিরাপত্তা, ভূমি ও পুকুর জবরদখল, বসতভিটা হতে উচ্ছেদের চেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বন্ধ ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে একজন উপদেষ্টা যুক্ত করার দাবিতে রবিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছে আদিবাসী।
‘সম্মিলিত আদিবাসী সমাজের ব্যানারে’ অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে নাচোল, গোমস্তাপুর ও সদর উপজেলার শিক্ষার্থীসহ তিন শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় নাচোল বাসস্ট্যান্ড মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা চত্বরে গিয়ে বিভিন্ন অফিসের সামনে দিয়ে ঘুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিচিত্রা তিরকির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন- উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিংগু মুরমু, সাধরণ সম্পাদক প্রভাত টুডু, গোমস্তাপুর উরাঁও আদিবাসীদের দিঘরী পরিষদের রাজা জহরলাল এককা, নাচোলের রানীমা ইলা মিত্র সংসদের আহ্বায়ক বিধান সিং, নাচোল পূজা উদযাপন পরিষদের নেত্রী রঞ্জনা বর্মন, সরকার পতনের পর নির্যাতিত নারী গোমস্তাপুরের মাধাইপুর গ্রামের বিথি তুরি সরদারসহ আরো অনেকে।
বক্তারা বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই বারবার আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন-নিপীড়ন নেমে আসে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে কেউ রক্ষা করতে এগিয়ে আসে না। আমরা জন্মেছি এদেশে, মরবও এদেশে। যতই নিপীড়ন নেমে আসুক, দেশ ছেড়ে ও বসতভিটা ছেড়ে যাব না। আমরা চিরকালই বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি। আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই। সমতলের আদিবাসীদের আলাদা ভূমি কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে। আমরা আর কতকাল বঞ্চনার শিকার হবো?
এছাড়া মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নাচোল পৌর আমির মনিরুল ইসলাম, নাচোল বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা এনামুল হক।
শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ২৭টি স্থানে আদিবাসীদের ওপর হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিষয় উল্লেখ করে এর প্রতিকার চেয়ে এবং ৮ দফা দাবি জানিয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।